লালিত সংস্কৃতি ও স্থাপত্য কলার ধারকঃ কুসুম্বা মসজিদ

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৬, ২০১৫ সময়ঃ ৬:৪৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৫২ অপরাহ্ণ

সিফাত তন্ময়

mmmবাংলাদেশে মুসলিম স্থাপত্য শিল্পরীতির প্রথম যুগপর্বের (১২০২-১৫৭৫খ্রিঃ) ঐতিহ্যবাহী একটি নিদর্শন কুসুম্বা মসজিদ। এটি নওগাঁ জেলা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের কুসুম্বা গ্রামে প্রায় ৮০ বিঘা  লম্বা একটি বিশাল সদৃশ্য দীঘির পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত। এই মসজিদ বাংলার স্বাধীন সুলতানী আমলে নির্মিত চতুস্কোণ বিশিষ্ট কালো ও ধুসর বর্ণের পাথর এবং পোড়া মাটির ইষ্টক দ্বারা নির্মিত, কুসুম্বা শাহী মসজিদ মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের এক অনুপম ও উজ্জ্বল নিদর্শন।

উল্লেখ্য যে, নওগাঁর কুসুম্বা মসজিদটি একটি ঐতিহ্যবাহী যা এখনো পাঁচ টাকার নোটে দর্শনীয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলায় নিযুক্ত আফগান শাসক গিয়াস উদ্দীন বাহাদুর শাহ’র আমলে জনৈক সোলায়মান ১৫৫৮ খিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। সে হিসাবে মসজিদটির বর্তমান বয়স ৪৫৬ বছর। মসজিদটি বাংলা চালাঘরের মতো উত্তর-দক্ষিণে ঈষৎ বক্র। উত্তর-দক্ষিণে ৫৮ ফুট লম্বা ও ৪২ ফুট চওড়া। চারদিকের দেয়াল ৬ ফুট পুরু করে তৈরি। দেয়ালের বাইরের অংশে পাথর দিয়ে ঢেকে দেয়া। মসজিদের সম্মুখভাগে রয়েছে ৩টি দরজা। আকারে দুটি বড়, অন্যটি অপেক্ষাকৃত ছোট। দরজাগুলো খিলানযুক্ত মেহরাব আকৃতির। মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার। মিনারগুলো মসজিদের দেয়াল পর্যন্ত উঁচু ও আট কোণবিশিষ্ট।

ছাদের উপর রয়েছে ৬টি গুম্বুজ। যা ২টি সারিতে তৈরি। দ্বিতীয় সারির গম্বুজগুলো আকৃতির দিক দিয়ে ছোট। জ্যামিতিক নক্সার আদলে পোড়ামাটির সুদৃশ্য কারুকাজ কৃত স্টাইল, মিহরাবে বিভিন্ন ফুল, লতা- পাতা ঝুলন্ত শিকল ও মনোরম মৌলিক কারুকাজ যা মুসলিম স্থাপত্য কলারীতির অপূর্ব সমাহার। কুসুম্বা মসজিদ আত্রাই নদীরদক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এবং মান্দা থানা সদর থেকে তিন মাইল দুরে অবস্থিত। রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের পশ্চিমে এবং ২৫.৮৩ একর জলা বিশিষ্ট বিশাল কুসুম্বা দিঘির পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত। কুসুম্বা মসজিদের চারকোণে অতন্দ্র প্রহরীর মতো ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে অষ্টাভুজাকৃতির চারটি শক্ত বুরুজ বা টারেট। আর উপরে ছয়টি গম্বুজ।

প্রতিক্ষণ/এডি/এস. টি.

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G